২২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০৮ পূর্বাহ্ন, ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শনিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রাজশাহীর প্রতিনিধিঃ দুটি স্বর্ণের বার উদ্ধার করে এবং চোরাকারবারীদের আটক করে, এবার মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগের রোষানলে পড়েছে রাজশাহী বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ।
গত ১ অক্টোবর দুটি সোনার বারসহ রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ দুই কাতার ফেরত শ্রমিককে পাড়কাও করে। নগর পুলিশের শ্রেষ্ঠ উদ্ধারকারী অফিসারদের অন্যতম এসআই আবদুল মতিন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বিশেষ ওই উদ্ধার অভিযান চালান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন-চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার উপর রাজারামপুর (কুমারপাড়া), বর্তমান ঠিকানা রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ি থানার দরগা গুশিরা এলাকার মৃত মহসিন আলীর ছেলে আজিজুর ইসলাম (৪০) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানাধীন হরিনগর তাঁতিপাড়া এলাকার আঃ মঙ্গুর ছেলে ফারুক হোসেন (৩২)।
জানা গেছে, গত ১ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার সময় বর্নালীর মোড় এলাকায় গ্রামীন ট্রাভেলস বাসে (ঢাকা মেট্রো ব-১৫-২২৫১) থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা ঢাকা থেকে ওই বাসটির যাত্রী ছিলেন। গোপন সংবাদ পেয়ে তাদের ধরে ফেলেন এসআই মতিন। উদ্ধার হওয়া ২টি স্বর্ণেরবারের বর্তমান বাজার মূল্য ১৫,১৫,৮২৪ টাকা।
বিশেষ এই অভিযানে তার সাথে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই শাহিন আখতার, মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইফতেখার মোহাম্মদ আলআমিন, এটিএসআই মিনহাজুল হক সহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন ।
তাদের আটক করা থেকে শুরু করে তাদের তথ্য এবং তাদের বের করে দেয়া মতে দুইজনের প্যান্টের ভেতরে (আন্ডার প্যান্টে) লুকানো অবস্থায় দুজনের কাছে একটি একটি করে মোট দুইটি স্বর্ণেরবার উদ্ধার করা পর্যন্ত থানা পুলিশ, গ্রামীন ট্রাভেলস কতৃপক্ষ ও বাসের যাত্রীরাও মোবাইল ফোনে ভিডিও করে রাখেন। পুলিশ আটককৃত ব্যক্তিদের স্বর্ণের বার সংক্রান্ত বৈধ কাগজপত্র উপস্থাপন করতে বললে তারা কাগজপত্র উপস্থাপন করতে না পারায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছেন।
এসআই মতিন বলেন, গ্রেফতাকৃতদের ছাড়িয়ে নিতে বিভিন্ন মহল থেকে একের পর এক তদবির এসেছে। ওই এলাকার এক চেয়ারম্যান অন্তত ২০/২৫ বার আসামীদের ছাড়িয়ে নিতে ফোন দিয়েছেন। কিন্তু তাতে তিনি রাজি হননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি সাংবাদিক, আইজিপি ও ডিআইজির কাছে আমার নামে অভিযোগ করবেন বলে হুমকি দেন। এছাড়াও রাজপাড়া থানার এক এটিএসআই সোনা চোরাচালানীদের পক্ষে তবদির করেন। তাদের কথা না রাখায় তিনি সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অভিযান নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তিনি আরো জানায় গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে আমার গ্রামের বাড়ির মোড়ে মোড়ে চোরাচালান চক্রের ১০/১৫ জন অজ্ঞাতনামা যুবক মোটর সাইকেলযোগে মোহড়া দিয়ে আমার এলাকায় জানতে চান বোয়ালিয়া মডেল থানায় কর্মরত এস আই এর বাড়ি কোনটা এবং আমার পরিবার সহ আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে আসেন।
এদিকে, সোনার বার উদ্ধার অভিযানে ধারণ করা ভিডিও এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের প্রত্যেকের কাছে একটি একটি করে দুইটি সোনার বার ছিলো যা জনসম্মুখে সেগুলো উদ্ধার করে পুলিশ।
সোনার বার উদ্ধারের বিষয়ে যাত্রীবাহী ওই বাসটির চালক, সুপারভাইজার ও হেলপারদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, গাড়িভর্তি যাত্রী ও আমাদের সামনে দুইজনকে তল্লাশি করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ দুইটি সোনার বার উদ্ধার করেন। যেগুলো আমাদের সামনেই জব্দ করে দুইজন যাত্রীকে আটক করে নিয়ে যান।
জানতে চাইলে গ্রামীন ট্রাভেলস এর ম্যানেজার হাসান বলেন, আমাদের গাড়ি আটকানোর খবর শুনে আমি বর্নালির মোড়ে যাই। আমার সামনেই থানার পুলিশ সদস্যরা আটকদের আটক করা থেকে শুরু করে তাদের দুই জনের প্যান্টের ভেতরে (আন্ডার প্যান্টে) লুকানো অবস্থায় দুজনের কাছে দুইটি সোনার বার উদ্ধার করা পর্যন্ত আমি আমার নিজ মোবাইলে ভিডিও ধারন করি। সেখানে তাদের কাছ থেকে দুইটি সোনার বার উদ্ধার হয় যা আমার মোবাইলে ভিডিও ধারন করা আছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারন চন্দ্র বর্মন বলেন, সোনার বারের মামলা নিয়ে বিপাকে রয়েছেন তিনি। এতো গুলো অফিসার, গ্রামীন ট্রাভেলস এর যাত্রীরা ও গ্রামীন ট্রাভেলস কতৃপক্ষের সামনে ভিডিও করে স্বর্ণেরবার উদ্ধার করেও বিতর্কের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তারপরেও উদ্ধতন কতৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানান তিনি।